শুরুর কথা

ছোটবেলার একটা মুভি ভয়ঙ্করভাবে দাগ কেটেছিলো মনে। সেটার রেশ টেনে বেড়াচ্ছি এখনো। মুভিটার প্রোটাগনিস্ট ছিলো ‘হ্যাল’, একটা সেন্টিনেন্ট কম্পিউটার। ঠিক ধরেছেন, মুভিটার নাম ছিল ‘২০০১: অ্যা স্পেস ওডেসি’। মানুষ আর ‘চিন্তা করতে পারা’ যন্ত্রের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন আমরা দেখেছি ওই মুভিটাতে।

শত বছর ধরে ইন্টেলিজেন্ট মেশিনের খোঁজে মানুষের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আমরা দেখছি অনেক কিছু। আইরনম্যানের জার্ভিস, টার্মিনেটর, নাইট রাইডারের ‘কিট’ পার্সোনালিটিগুলোর প্রতি আমাদের ব্যাকুলতা অথবা উৎসুক ভাব একটা পাওয়ারফুল আইডিয়া। যন্ত্র মানুষের মতো চিন্তা করতে পারছে কি পারছে না অথবা চিন্তা করতে পারার মতো যন্ত্র তৈরি হচ্ছে কি হচ্ছে না - সেটা থেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে মানুষ হাল ছাড়ছে না এই আইডিয়া থেকে। আমিও ব্যতিক্রম নেই সেক্ষেত্রে। যন্ত্রের ওপর আমার অতিরিক্ত নির্ভরতা সেটার একটা বহিঃপ্রকাশ।

অবশ্যই আমরা চাইছি যন্ত্র যাতে আমাদের মতো করে চিন্তা করতে পারে। সেটার বহিঃপ্রকাশ দেখছি সেলফড্রাইভিং কার, লং হ্যল ফ্লাইট যেখানে অধিকাংশ সময় সিস্টেমের দেখভাল করছে রুল বেজড যন্ত্র, এর মানে হচ্ছে আমরা চাইছি যন্ত্র সহযোগী হিসেবে দাড়াক আমাদের পাশে। হাত লাগাক সমাজের অসঙ্গতি দূর করতে। সাহায্য করুক সরকারি সার্ভিস ডেলিভারিতে। সময় কমাতে। ডাক্তারকে সাহায্য করতে সঠিক ডায়াগনস্টিকস দিয়ে। মানুষের সাহায্যে।

আমরা যেভাবে চিন্তা করি সেটার অনেক কিছুই দিয়ে দেয়া হয়েছে যন্ত্রকে। একটা এলিভেটর ঠিক কোন সময় পর্যন্ত কল নেবে, অথবা উপরে ওভারলোডেড হলে বাইরের কলে প্রতিটা ফ্লোরে দাড়াবে কিনা, অথবা অনেকগুলো এলিভেটর হলে কোন এলিভেটরটা প্রক্সিমিটি, কলের হিসেব ধরে আপনার ফ্লোরে সবচেয়ে কম সময়ে এসে দাড়াবে সেটা এখন নিত্যদিনের হিসেব।

যেহেতু থিঙ্কিং মেশিন, এর মানে ইন্টেলিজেন্সটা সিন্থেটিক – সেকারণে আমাদের আলাপের মূল বিষয় “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তবে, শুরুতে মেশিনকে শেখানোর ব্যাপারটা এখনো ধোঁয়াশা আছে এখনো। আর সেকারণে এই বই। সিরিজ হিসেবে।

বাংলায় ডিপ লার্নিং নিয়ে বই না থাকায় বইটার ব্যাপারে এক্সপেকটেশন বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। কমপ্লেক্সিটি ফেলে দিয়ে অফিসিয়াল ডকুমেন্টেশন গাইডলাইনের ভেতরে থাকতে চেষ্টা করেছি প্রথম সংস্করণে। অতিরিক্ত ইংরেজির ব্যবহার ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Last updated