অডিওফাইলের গল্প
  • অডিওফাইলের গল্প
  • শব্দের গল্প
  • কিভাবে এলাম এই শব্দে?
  • স্পিকার নিয়ে কথাবার্তা
  • পার্সোনাল অডিওফাইল সেটআপ
  • ড্যাক অ্যাম্পের কিছু আলাপ
  • কিছু গানের কথা
  • হেডফোনের আদ্যোপান্ত
  • ভালো হেডফোনের খোঁজে
  • ইকুয়ালাইজেশন কেন?
  • ইকুয়ালাইজেশন না থাকলে কেমন হয়?
  • ইকুয়ালাইজার কিভাবে কাজ করে?
  • হাই-রেজল্যুশন অডিও
  • হেডফোন অ্যাম্পলিফায়ার
  • 'ডিজিটাল টু এনালগ কনভার্টার' (ড্যাক) আসলে কী?
  • সাউন্ড সোর্স, গানের প্রাণ
  • গান এনকোড করার কাহিনী
  • এমপি-থ্রী ফাইল ফরম্যাট
  • গানের আসল সোর্স
Powered by GitBook
On this page

Was this helpful?

গান এনকোড করার কাহিনী

কমিউনিকেশনের লোক বলে হয়তোবা, যেখানেই যাই সেখানের তাল গাছে গরু বেঁধে শুরু করি রচনা। আবার হয়তোবা, এই ‘কমিউনিকেশন’ই কানেক্ট করতে পারে ভালো - আমাদের জীবনের ডটগুলোকে। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। বিশেষ করে সিগন্যাল কোরে দেবার জন্য। সেনাবাহিনীতে।

শব্দ এনালগ। ভুল নেই এতে। তাহলে গল্প কেন ডিজিটালের? আসলেই তো! ধরুন, এই শব্দকে পাঠাবেন আরেক জায়গায়। অথবা, ধরে রাখতে চাচ্ছেন কোথাও। কোন মিডিয়াতে। কম্পিউটারে। পেন ড্রাইভে। মন খারাপ, কথা বলতে চাচ্ছেন মোবাইলে। বন্ধুর সাথে। অথবা, দেখতে চাচ্ছেন মুভি একটা। অডিও ছাড়া ভিডিও, ভাবা যায় এখন?

এই এনালগ শব্দকে যাই করেন না কেন - যেতে হবে ওটাকে। ‘ডিজিটাল’য়ের মধ্য দিয়ে। হচ্ছে না বিশ্বাস? ভেবে দেখুন। আর এই ‘ডিজিটাল’ করতে হলে লাগবে এক ধরনের ‘এনকোডিং’। এনালগ সিগন্যালের একটা লম্বা স্ট্রিমকে ‘স্যাম্পল’ করতে লাগে প্রযুক্তি বন্ধু ‘পিসিএম’। পালস কোড মড্যুলেশন। ভাত রাঁধা হয়েছে কিনা সেটা একটা দুটো ভাত টিপে বলি বরং। এটাই ‘স্যাম্পলিং’। সবগুলো ভাত টিপে বললে হয়তোবা বলতাম শতভাগ ‘স্যাম্পলিং’য়ের আউটকাম। দরকার আছে কি সেটা?

অনেক শুমারি করি আমরা। পরিসংখ্যানের ভাষায় যতো বেশি ‘স্যাম্পলিং’, ততো ভালো রেজাল্ট। ধরুন, জিজ্ঞাসা করলেন - বাংলাদেশে ‘হাই রেজোল্যুশন’ অডিও শুনছেন কজন? আমার এলাকার বিশ জনকে প্রশ্ন করে জানা গেল তাদের মধ্যে শোনেন দুজন। মানে একশো জনে ১০%। এর মানে এই নয় যে পুরো দেশে শোনেন এই শতাংশ। বরং এই ‘স্যাম্পলিং’য়ে কানেক্ট করবেন যতো বেশি মানুষ, ততো নির্ভুল হবে রেজাল্ট। পুরো জনগণকে (আলাদা করে) জিজ্ঞাসা করতে পারলে তো কেল্লা ফতে। সম্ভব, তবে বাস্তবসম্মত নয় সেটা। আমাদের কাজ আছে হাজারো।

শেষমেষ শব্দকে ‘স্যাম্পলিং’? ঠিক তাই। তবে এটা একটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। হাজারো উচুঁনিচু হিজিবিজি তরঙ্গের খেলা। একটা গানে। পাল্টাচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে। এর ‘স্যাম্পলিং’ লাগবে তো প্রতি মুহুর্তে। এক সেকেন্ড নিলাম পরের সেকেন্ড নিলাম না - তাহলে তো শোনা হবে না গান। গান তো অনেক জটিল জিনিস, আপনার কথাই ধরুন না। বললেন - ‘আমার’। ‘স্যাম্পলিং’ নিলেন ‘আ’, পরেরটা নিতে নিতে ‘মা’ বাদ হয়ে চলে এলো ‘র’তে। পরে এটা শুনলে মনে হবে ‘আর’। পৃথিবীতে বেধে যাবে ভজঘট। স্বামীরা নেবে সুযোগ। বলবে ‘এটাই তো বলেছিলে’। বৌয়ের অর্ধেক অর্ধেক কথা শুনে করবে কাজ। তখন একটাও পড়বে না মাটিতে। নিজেদের রক্ষায় এগিয়ে এলেন ‘নাইকুয়েস্ট’ আর ‘শ্যানন’ নামের দু ভদ্রলোক। বাঁচালেন নিজেদের। আর, তার সাথে আমাদেরও।

উনারা বললেন দুটো জিনিস। আপনার শব্দের ওপরের সীমানা হবে যতো, ‘স্যাম্পলিং’ নিতে হবে তার দ্বিগুন। উদাহরন দেই বরং। স্বাতী ফোনে আমাকে ‘ভয়েস’ কল করলে সেটার ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ হয় ৩০০ হার্টজ থেকে ৩৪০০ হার্টজ। ভাববেন না, এই রেঞ্জই কিন্তু একটা ভয়েস কলের জন্য অনেক। সোজা ভাষায়, সুরেলা কন্ঠের দরকার পড়ে না বিয়ের পর। মেসেজ যেতে পারলেই হলো দরকার মতো। বিশেষ করে বাজারের ফর্দ। ধরে নেই ওই ফ্রিকোয়েন্সির ওপরের সীমানা ৪,০০০ হার্টজ। রাউন্ড করে। মানে ৪ কিলোহার্টজ। তাহলে, ‘স্যাম্পলিং’ হতে হবে নিদেনপক্ষে ৮ কিলোহার্টজ। ভেঙ্গে বললে, পুরো কলকে ঠিকমতো পার করতে ওই কলের ‘স্যাম্পলিং’ করতে হবে ৮ হাজার বার। প্রতি সেকেন্ডে। এখন আসি গানে। আমার ধারণা,

অডিও মার্কেটটা সবচেয়ে বেশি 'মিস-ইনফর্মড', না জানার ফলে ‘ইনভেস্টমেন্ট’ চলে যাচ্ছে ভুল জায়গায়। ভালো প্রযুক্তি নয়, থাকতে হবে দামী সেট। বাসায়। অথবা, আমাদের হাতের মুঠোয়। ব্যাপারটা অনেকটাই ভিন্ন।

টেলিফোনের ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ থেকে চলে আসি গানে। ধরুন গান শুনছি ওপেনস্টেজে। রমনার বটমূলে। আমরা যা শুনতে পাই সেটা ক্যাপচার করতে লাগবে ৪০ কিলোহার্টজ স্যাম্পলিং ফ্রিকোয়েন্সি। কেন? আগেই বলেছি - মানুষ শুনতে পায় ২০ কিলোহার্টজ পর্যন্ত। তার দ্বিগুন হলো এই ৪০। নাইকুয়েস্ট ভাইয়ের কথা মতো।

আমাদের মতো বুড়োদের গান শোনার পথ চলা শুরু হয় ‘ভাইনল’ দিয়ে। অনেকে বলে রেকর্ড। মনে আছে ওই প্লাস্টিকের কালো কালো রেকর্ড? ওগুলো কিন্তু পুরোটাই এনালগ। খারাপ ছিলো না সেটা। তবে, স্টোরেজ করতে গিয়ে শুরু হলো সমস্যা। খাজনার থেকে বেশি বাজনা। এর মধ্যে চলে এলো অপটিক্যাল প্রযুক্তির যুগ। ‘ডিজিটালি’ শব্দ রেকর্ড করতে সনি আর ফিলিপস তৈরি করলো ‘সিডি-ডিএ রেডবুক’। ১৯৮০ সালের কথা। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড নীতিমালার বই। মানুষের শোনার ওপরের রেঞ্জ ধরে তৈরি হলো অডিওর দুই চ্যানেলের একটা স্টোরেজ। অপটিক্যালে। চ্যানেল প্রতি স্যাম্পলিং ৪৪.১ কিলোহার্টস। আমাদের মনে হলো জিনিসটা ‘ভাইনল’ রেকর্ড থেকে বড় একটা আপগ্রেড। পেছনে তাকাইনি আর।

সমস্যা শুরু হলো অন্য জায়গায়। সিডি ভালো, তবে এটা তো ডিজিটাল। তাই এটা কপি করা যেতো হার্ডডিস্কে। আর হার্ডডিস্কে গেলেই তো কেল্লা ফতে। সেটা থেকে যতোই কপি করেন সেটার মান থাকে ওই শুরুর সিডির মতোই। তবে, গানের সিডির ওই ৭০০ মেগাবাইটের ডাটা স্টোরেজ কম নয় কিন্তু। দেখা গেলো দশটা গানের একটা সিডির প্রতিটা গানে তিন চার মিনিট করে ধরলে আসে গান প্রতি পঞ্চাশ মেগাবাইট। এই সাইজের গান নিলে কয়েকটা গানই ভরে ফেলবে আপনার এমপিথ্রি প্লেয়ার। আর যাই বলেন স্টোরেজ তো একটা সমস্যা। বড় সমস্যা। হোক সেটা এমপিথ্রি প্লেয়ার বা আপনার মোবাইল ফোন।

Previousসাউন্ড সোর্স, গানের প্রাণNextএমপি-থ্রী ফাইল ফরম্যাট

Last updated 5 years ago

Was this helpful?